শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৫ অপরাহ্ন
আজ আমার বড় মামা এডভোকেট আজিজুর রহমান আক্কাসের মৃত্যুদিবস। ২০০০ সালের ২৫ এপ্রিল তিনি পরলোকগমন করেন।
সাধারণত পারিবারিকভাবে আনুষ্ঠানিক দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে দিনটা পালন করা হয়। এ বছর করোনা ভাইরাসের কারণে তা সম্ভবপর নয় এজন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি।
আমার মামা বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তিনি দীর্ঘ দিন বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতি ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৩৯ সদস্য বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি কুষ্টিয়া থেকে এমএনএ নির্বাচিত হয়েছিলেন, গণপরিষদের অন্যতম সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদেরও সদস্য ছিলেন। তিনি একাধিক বার কুষ্টিয়া জেলা বার এসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হোন। তিনি আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সাধক ও অন্যতম সহচর ছিলেন।
এডভোকেট আক্কাস এর ভাতিজা আ.ক.ম সরোয়ার জাহান বাদশা কুষ্টিয়া-১ আসনের বর্তমান নির্বাচিত সাংসদ।
চুয়াডাঙ্গার বাদল ব্যারিষ্টার, ডাঃ আসাবুল হক (হ্যাবা ডাক্তার) মেহেরপুরের ছহিউদ্দিন বিশ্বাস, কুমারখালির গোলাম কিবরিয়া, কুষ্টিয়ার ব্যারিস্টার এম আমিরুল ইসলাম, এডভোকেট আহসান উল্লাহ, বর্তমান মেয়র আনোয়ার আলী, ভেড়ামারার রাজা সাহেব এবং মজিবুল হক মাঙ্গন, দৌলতপুরের নিজাম উদ্দীন, খোদা বকস, জাব্বার দেওয়ান ও শামসুদ্দিন মালিথা প্রমূখ তাঁর অতি ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ছিলেন।
আমার মামা কুষ্টিয়া জেলার বাহিরমাদি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি খাস মথুরা পুর হাইস্কুল থেকে মেট্রিক, রাজশাহী কলেজ থেকে ইন্টার মিডিয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র এবং বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সবসময়ই ছাত্র রাজনীতিতে ঘনিষ্ঠভাবে সক্রিয় ছিলেন এবং নেতৃত্ব দিয়েছেন। সাধারণ মানুষের প্রতি মমত্ববোধ ও ভালোবাসা ছিল কিংবদন্তি তুল্য।
তিনি আমাদের পরিবারের সকলের মহীরুহ, পরিচয় এবং ভরসাস্থল ছিলেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি খুবই সাদা মাটা জীবন যাপন করতেন। একজন সহৃদয়বান, নিরহংকারী আদর্শবান মানুষ ছিলেন। ছোট বড় সকল আত্মীয় স্বজনের খবর রাখতেন এবং তাঁর এমন নিবিড় সুদৃষ্টি কখনোই ভুলবার নয়।
ফুটবল খেলা ছিলো তার অতি প্রিয়। মামা আমার ফুটবল খেলা বিশেষভাবে পছন্দ করতেন। তাছাড়া স্কুল কলেজে এবং বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক সংগঠন ছাত্রলীগের সাথে সক্রিয় থাকায় এবং তাঁর পেশাগত সাবজেক্ট আইন পড়ার কারনে বোধ হয় আমি পরিবারের ভাইবোনদের মধ্যে বড় মামার বিশেষ স্নেহ পেয়েছি। যা আমার জীবনের অন্যতম আশির্বাদ বলে মনে করি।
আজকের এই দিনে আমি আমার বড় মামাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ও তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং সকলের কাছে এ অনন্য বর্ণাঢ্য ব্যাক্তিত্বের অধিকারী আমার বড় মামার জন্য দোয়া প্রার্থনা করছি।
সকলে দোয়া করবেন মহান আল্লাহ পাক যেন তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করেন।
লেখকঃ ট্রেজারার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ।